কুমারিকা তেল কি চুলের জন্য ভালো ও কুমারিকা তেলের উপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আপনি কি কুমারিকা তেল চুলের জন্য ভালো কিনা এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সাহায্য করবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে কুমারিকা তেল চুলের জন্য কতটা ভালো এবং কুমারিকা তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা আরো জানতে পারবেন কুমারিকা তেলের ব্যবহার বিধি, কুমারিকা তেলের দাম, আসল কুমারিকা তেল চেনার উপায়, কুমারিকা তেলের অপকারিতা ইত্যাদি।
ভূমিকা
সুন্দর স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও ঘন চুল সবাই চায়। চুল স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে আমরা কত কিছুই না ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি চুলের জন্য কোন তেল বেশি উপকারী। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যেসব তেল সেই তেলগুলো চুলের জন্য অনেক উপকারি। ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি তেলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি তেল হচ্ছে কুমারিকা।
আরো পড়ুনঃ নবরত্ন তেল কি চুল পড়া কমাতে পারে
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কারণে যেমন দূষণ, ভুল খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে অসময়ে চুল পড়া সমস্যা অনেকের মধ্যে দেখা যায়। কিন্তু আমাদের এই ব্যস্ততম জীবনে কিভাবে সহজে চুল পড়া রোধ করা যায় তার সলিউশন সবাই খোঁজে। এর সমাধান হিসেবে কুমারিকা তেল ব্যবহার করতে পারেন। কুমারিকা তেল একদিকে যেমন চুল পড়া কমাবে অন্যদিকে অন্যদিকে চুল ঝলমলে করে তুলবে।
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে থানকুনি পাতার উপকারিতা
এই তেলে হারবাল উপাদান থাকার কারণে চুলকে ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি এই তেল ব্যবহারের ফলে দূষণ থেকেও চুলকে সুরক্ষিত রাখে। কুমারিকা তেল চুলের জন্য অনেক উপকারি। আপনি যদি এর উপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই জেনে নিবেন। এক্ষেত্রে আপনার চুলে ব্যবহারের অনেক সুবিধা হবে।
কুমারিকা তেলের উপকারিতা
শ্রীলংকার বিশেষ প্রাকৃতিক উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি হয় কুমারিকা তেল। এ তেল চুরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাহলে চলুন কুমারিকা তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
চুল পড়া কমায়ঃ কুমারিকা তেলে রয়েছে ব্রাক্ষী, আমলা, এলোভেরা এবং মেথির মতো প্রাকৃতিক উপাদান। এই উপাদানগুলো চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় এবং চুল পড়া রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চুলের গোড়া মজবুত করেঃ চুল পড়া কমাতে হলে প্রথমে চুলের গোড়া মজবুত করা অত্যন্ত জরুরি। এই তেল ব্যবহারের ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় যার ফলে চুল পড়া কমে যায়।
চুল কালো করেঃ কুমারিকা তেল সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলে চুলের গোড়ায় পরিপূর্ণ পুষ্টি পায়। যার ফলে চুলের অন্যান্য সমস্যা দূর করে সেইসাথে চুল কালো ঝলমলে করে তোলে।
চুল গজাতে সাহায্য করেঃ কুমারিকা তেল শুধুমাত্র চুল পড়া কমায় না বরং এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। কারণ কুমারিকা তেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান। যা চুলের গোড়ায় পরিপূর্ণ পুষ্টি যোগাতে সক্ষম।
চুলের জন্য নিরাপদঃ এ তেল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয় বলে চুলের জন্য এটি অত্যন্ত নিরাপদ। বাজারে অনেক তেল পাওয়া যায় যেগুলো ভেজাল বা কেমিক্যালযুক্ত। কুমারিকা তেল হারবাল গুণসম্পন্ন হওয়ার কারণে চুলের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
মাথা ঠান্ডা রাখেঃ চুলের গোড়ায় আদ্রতা যুগিয়ে চুলকে স্বাস্থ্য জল করে তোলে। এছাড়াও এই তেল ব্যবহারের ফলে মাথা ঠান্ডা রাখে এবং প্রশান্তি এনে দেয়।
চুলের খুশকি দূর করেঃ কুমারিকা তেল ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর হয় এবং চুলের খুশকি ধীরে ধীরে কমে যায়।
চুলের আগা ফাটা দূর করেঃ নিয়মিত কুমারিকা তেল ব্যবহার করলে চুল নরম ও মসৃন হয়। চুলের রুক্ষতা দূর করে বলে চুলের আগা ফাটে না।
চুলে বৃদ্ধি ঘটায়ঃ এই তেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সেজন্য নিয়মিত কুমারিকা তেল ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধি ঘটায় এবং চুল ঝলমলে হয়ে ওঠে।
কুমারিকা তেলের ব্যবহার বিধি
কুমারিকা তেল সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রথমে কুমারিকা তেল হাতের তালুতে নিয়ে দুই হাতে মাখিয়ে নিতে হবে তারপর চুলের গোড়ায় আলতো ভাবে মেসেজ করতে হবে। এভাবে সমস্ত মাথায় এই তেল ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে এ তেল সম্পূর্ণ চুলেও ব্যবহার করতে পারেন তাদের ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে নিম তেলের উপকারিতা
এই তেল চুলে মাখার তিরিশ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন এতে করে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। তাছাড়াও আপনি এ তেল ব্যবহার করে রেখে দিতে পারেন একদিন পর শ্যাম্পু করতে পারেন। ভালো ফলাফলের জন্য এই তেল সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন।
কুমারিকা তেল কি চুলের জন্য ভালো
এই তেল সম্পর্কে অনেকে অনেক রকম প্রশ্ন করে থাকে। বিশেষ করে কুমারিকা তেল কি চুলের জন্য ভালো এ প্রশ্নটা সচরাচর বেশি দেখা যায়। কুমারিকা তেল চুলের জন্য ভালো কিনা এ সম্পর্কে আমরা এখানে আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
কুমারিকা তেল চুলের জন্য উপযুক্ত। কেননা বিশেষজ্ঞরা বলেন এই তেলে ১০০ ভাগ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ যা চুলের জন্য অতিব প্রয়োজন। এই তেল ব্যবহারের ফলে চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং চুল সুন্দর করে তোলে। সম্পূর্ণভাবে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি সেজন্য নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে কুমারিকা তেল চুলের জন্য ভালো।
এই তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল ঘন, লম্বা এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এছাড়াও যারা সময়ের অভাবে চুলের ঠিকমতো যত্ন নিতে পারে না তাদের জন্য এ তেল অত্যন্ত উপকারী। এই তেল ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চুলকে সুরক্ষিত রাখে। এই তেল ব্যবহারে যদি আপনি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
কুমারিকা তেলের দাম
কুমারিকা তেল কিনতে গেলে জানতে হবে তার দাম। তবে এ সকল পণ্যের দাম সচরাচর একই থাকে। ২০০ মিলি কুমারিকা তেলের দাম ১৭০ টাকা। তবে বিশেষ ছাড়ে এর মূল্য কিছুটা কম হতে পারে। এ তেল গুনে ওমানে সেরা বলে বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করে থাকে। কারণ এই তেল ব্যবহারের ফলে চুলের অনেক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।
আসল কুমারিকা তেল চেনার উপায়
বাজারে সকল পন্যেই ভেজাল বানানোর কারণে নকল পণ্য বের হয়েছে। কুমারিকা তেলেরও নকল বের হয়েছে যে কারণে আসল কুমারিকা তেল চেনার কয়েকটি উপায় জেনে থাকা দরকার। আমরা এখানে আসল কুমারিকা তেল চেনার উপায় আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
- কুমারিকা তেল চেনার প্রথম উপায়টি হচ্ছে তেলের বোতলের উপরের মোড়ানো কাগজটি দেখে। আসল তেলের কাগজটি দিয়ে বোতলের মুখ সম্পূর্ণভাবে মোড়ানো থাকে না কিন্তু নকল তেলে মুখ পাতলা কাগজ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে মোড়ানো থাকে।
- আসল তেলের বোতলের মুখ গাড়ো সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং নকল তেলের মুখ হালকা বা ফ্যাকাশে সবুজ রংয়ের হয়ে থাকে।
- তেলের রং দেখেও আসল নকল চেনা যায়। কুমারিকা আসল তেলের রং গাড়ো সবুজ রঙের হয়ে থাকে নকল তেলের রং ফ্যাকাশে সবুজ বা সাদাটে হয়ে থাকে।
- বোতলের মুখের নিচে দাম বড় করে লেখা থাকে নকল তেলের বোতলে এর দাম লেখা থাকে অনেক ছোট করে।
- আসল কুমারিকা তেলের বোতলের মধ্যে পুরোটা শিকড় দেওয়া থাকে আর নকল তেলের বোতলের মধ্যে পুরোটা শিকর দেয়া থাকে না।
- বোতলের গায়ে স্টিকার দেখেও আসল ও নকল চেনা যায়।
কুমারিকা তেলের অপকারিতা
কুমারিকা তেলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে নকল কুমারিকা তেল আসল মনে করে ব্যবহার করলে সেই তেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা উপকারিতা হতে পারে। সেজন্য অবশ্যই এই তেল কেনার আগে আসল বা নকল দেখে কিনবেন। তেল ব্যবহারের পর যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে তেল ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে হবে।
প্রতিবেদকের মন্তব্য
কুমারিকা তেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আশা করি আপনারা কিছুটা ধারণা পেয়েছেন উপরের আলোচনার মাধ্যমে। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন চুলের কি কি উপকার করে থাকে। প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং পরিবার পরিজনের সাথে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url